বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৮ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য চিকিৎসক এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এ ধরনের ওষুধ যাতে বাজারে আসতে না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রেসিডেন্ট ওষুধ কেনার সময় মেয়াদোত্তীর্ণ কিনা সেটি দেখে কিনতে ব্যবস্থাপত্রে রোগীদেরকে পরামর্শ দেয়ার জন্য চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমি জানি, এতে তাদের কিছু সময় নিতে হবে, তবে এতে সকলের জন্য খুবই ভাল হবে।
প্রেসিডেন্ট গতকাল নগরীর একটি হোটেলে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী কার্ডিয়াক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। প্রেসিডেন্ট বলেন, ভেজাল এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ যাতে বাজারে প্রবেশ করতে না পারে, এ জন্য চিকিৎসকদেরকে অবশ্যই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রেসিডেন্ট ওষুধ সংরক্ষণের জন্য কক্ষের তাপমাত্রা যথাযথ রাখতে ফার্মেসী মালিকদের নির্দেশ প্রদান করতে সরকার এবং সূশ্লিষ্ট অন্যান্যদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ৯৫ ভাগ ফার্মেসী ওষুধ সংরক্ষনের জন্য কক্ষের উপযুক্ত পরিবেশ বজায় রাখে না। তিনি বলেন, এ ধরনের সার্কুলার আমাদের সকলের জন্য সুফল বয়ে আনবে। রাষ্ট্রপতি এ বিষয়ে ফার্মেসীস্টদের ওপর নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, চিকিৎসককে রোগীদের জন্য দেয়া ব্যবস্থাপত্রে মানসম্পন্ন ওষুধ লেখার পরামর্শ দেন।
প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ সারাদেশে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে অপ্রয়োজনীয় মেডিকেল টেস্টের নামে রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা না নিতে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে পল্লী এলাকায় কিছু নামকরা হাসপাতাল ও ক্লিনিকের বিরুদ্ধে চিকিৎসার নামে কোন কোন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে খারাপ আচরণের অভিযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, একজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে, এর দায়ভার সকল চিকিৎসকের কাধেঁই চেপে বসে। এতে চিকিৎসক এবং রোগীদের মধ্যে আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়। তিনি এর জন্য দায়ী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
প্রেসিডেন্ট নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে আরো সর্তক হতে শুধুমাত্র ব্যাক্তিগত স্বার্থে নিজ পেশার মর্যাদা ক্ষুণ্ন না করার জন্য চিকিৎসকদের প্রতি আহবান জানান।
প্রেসিডেন্ট হাসপাতালের জন্য আধুনিক এবং উন্নত চিকিৎসা সামগ্রী ক্রয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রেসিডেন্ট হৃদরোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, হৃদরোগের চিকিৎসা খুবই ব্যায়বহুল। এ জন্য এ রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। এ ধরনের প্রচারণা অনেক অকাল মৃত্যু থেকে অনেকের জীবন রক্ষা করবে।
তিনি সম্মেলনে যোগদানকারী সকল অতিথিদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, বাংলাকার্ডিও-২০১৯ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের জন্য একটি চমৎকার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সম্মেলনে যোগদানকারি দেশী ও বিদেশী হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের জন্য হৃদরোগ চিকিৎসা বিজ্ঞানে সাম্প্রতিক অগ্রগতি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি, জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার আবদুল মালিক (অব.) বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটির প্রেসিডেন্ট একেএম মহিবুল্লাহ এবং মহাসচিব অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল শফি মজুমদার, সাইন্সিটিফিক কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আফজালুর রহমান, জাতীয় হৃদরোগ ইনিস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীর জামাল উদ্দিন এবং যুক্তরাষ্ট্রের আলআবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এনসি নন্দ অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।